শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ অপরাহ্ন

মূল্যস্ফীতি-আর্থিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীরাও ভাঙছে সঞ্চয়

মূল্যস্ফীতি-আর্থিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীরাও ভাঙছে সঞ্চয়

স্বদেশ ডেস্ক:

দেশে প্রায় তিন বছর ধরে গড় মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি। অর্থনীতির পরিভাষায় মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি কম হলে সেটি অর্থনীতির সংকটকে ইঙ্গিত করে। দুই বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের পরিবারগুলোর আয় কমে গেছে। এতে সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে মানুষ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী দেশের শিক্ষাব্যয়ও বাড়ছে প্রতি মাসে। এর প্রভাব পড়েছে স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়েও। গেল অর্থবছরের শেষের দিকে অর্থাৎ জুন মাসে কিছুটা প্রবৃদ্ধি থাকলেও নতুন অর্থবছরের শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমছে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়। এক মাসের ব্যবধানে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এছাড়াও গত চার মাসে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হলো নতুন করে যেসব হিসাব খোলা হয়েছে কিংবা আগের হিসাবে যে পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে তার চেয়ে বেশি অঙ্কের টাকা উত্তোলন হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ আর্থিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীরাও তাদের সঞ্চয় ভেঙে ফেলছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে স্কুল শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে আমানত কমেছে ৪৮ কোটি টাকা। এর আগের বছর ২০২৩ সালের মে মাস শেষে আমানতের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। সে হিসেবে কমেছে প্রায় ১০১ কোটি টাকা।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, সাধারণত বছরের শুরুতে কিংবা শেষের দিকে অনেকের টাকা উত্তোলনের চাপ থাকে। অনেকে নভেম্বর-ডিসেম্বর সময়ে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় বেড়াতে যান। আবার অনেকে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করতে গিয়ে আমানত ভাঙেন। কিন্তু বছরের পুরো সময় জুড়ে শিক্ষার্থীদের আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নিয়মিত খরচ মেটাতে হিমশিম অবস্থার মধ্যেই আমানত উত্তোলন করতে হচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি ও ঊর্ধ্ব মূল্যস্ফীতি এমনটাই ইঙ্গিত করছে।

শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনা ও তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। এই কার্যক্রমের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি করা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আরও উপযোগী করে তোলা। এ পর্যন্ত ৫৯টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করেছে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এই অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন সব ধরনের ফিস ও চার্জের ক্ষেত্রে রেয়াত পাওয়া, বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া, ন্যূনতম স্থিতির বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে ছাড় ও স্বল্প খরচে ডেবিট কার্ড পাওয়ার সুযোগ। মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখেই এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সরকার অনুমোদিত যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৮ বছরের কম বয়সী যে কোনো শিক্ষার্থী ব্যাংকে গিয়ে মাত্র ১০০ টাকা প্রাথমিক জমা প্রদান করে এবং অভিভাবকের সহায়তায় একটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে। এ ধরনের ব্যাংক হিসাব পরিচালনার জন্য কোনো চার্জ বা ফি আদায় করা হয় না। অন্যদিকে আকর্ষণীয় মুনাফা দেওয়া হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877